নীলা

 নীলা






এক গ্রামে ছোট্ট এক মেয়ে থাকত, নাম তার নীলা। নীলার বাবা ছিল একজন কৃষক। তারা খুব বেশি সম্পদশালী ছিল না, কিন্তু তাদের মন ছিল বড়। নীলা সবসময় স্বপ্ন দেখত দূর কোন শহরে গিয়ে পড়াশোনা করার। কিন্তু আর্থিক পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছিল না।


একদিন, নীলা গ্রামের একটি মেলায় গেল। সেখানে একটি ছোট স্টল দেখল, যেখানে লেখা ছিল, "স্বপ্ন পূরণের জন্য ভালো কাজ করুন।" নীলা একটু দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিল, কিন্তু তার মনের গহীনে বিশ্বাস জন্মাল যে যদি সে সত্যিই অন্যের জন্য কিছু করে, তবে তার স্বপ্নও হয়তো পূরণ হবে। নীলা ভাবতে থাকে তার পক্ষে কোন কোন ভালো কাজ করা সম্ভব। সারাদিন তার মাথায় এই চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে নানা রকম কাজ করে আর মনের মধ্যে থাকে ভালো কিছু করার একটা প্রয়াস। নীলা ঠিক করে সে এলাকার ছোট ছোট বাচ্চা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা শেখানো। বিনা পয়সায় কারণ সে জানে টাকা পয়সা না থাকার যন্ত্রণা।


নীলা এরপর থেকে গ্রামের বাচ্চাদের বিনামূল্যে পড়াতে শুরু করল। পড়াশোনা শেষে, যে শিশুরা কোনোভাবে স্কুলে যেতে পারত না, তাদের বই, খাতা নিজের পয়সা বাঁচিয়ে কিনে দিত। ধীরে ধীরে পুরো গ্রাম তাকে ভালোবাসতে লাগল।


একদিন এক শহরের দানশীল ব্যক্তি গ্রামে এলো, তার নজরে পড়ল নীলার এই নিঃস্বার্থ কাজ। তিনি নীলার পড়াশোনার সমস্ত খরচ বহন করার প্রতিশ্রুতি দিলেন। নীলা অবশেষে শহরে গিয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারল।


নীলা ফিরে এসে গ্রামের প্রতিটি শিশুর মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে লাগল। গ্রামের মানুষরা বলত, “নীলা শুধু আমাদের গ্রামের নয়, সে আমাদের আশার আলো।”


নীলার এই ছোট ছোট ভালো কাজগুলোই তার জীবনে বড় স্বপ্ন পূরণের সেতুবন্ধন তৈরি করেছিল।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ