পর্ব ২০
রবিবারের সকাল। কাজে বেরোবার তাড়া নেই। অফিস নেই। অহিন বাড়ির সামনেটা পরিষ্কার করতে লেগে যায়। কদিন ধরে তৃষা বলছে, একটু পরিষ্কার করে দিতে। তৃষা ওখানে ফুল গাছ লাগাবে। অহিন গা দিচ্ছে না দেখে প্রথমে তৃষা গিয়েছিল পরিষ্কার করতে।
অহিন- কি ব্যাপার তুমি এসব করছ কেন?
তৃষা - বলতে বলতে মুখ ব্যথা হয়ে গেল। কাল কতগুলো ফুলের চারা জোগাড় করলাম, সেগুলো তো শুকিয়ে গেল।
অহিন চারিদিকটা একবার দেখে নিয়ে টপ করে তৃষার গালে একটা চুমু দিয়ে বলে - তুমি যাও তোমার কাজে, আমি করে দিচ্ছি।
তারপর সেই যে কাজে লেগেছে এখনো শেষ হলো না। নুপূর ওর একগাদা খেলার সরঞ্জাম নিয়ে বারান্দায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে নিজের খেলার মশগুল হয়ে আছে।
বেলা দশটা বাজে তৃষা একটা থালায় করে কয়েকটা রুটি আর তরকারি দিয়ে গেছে অহিন কে দিল খেতে। অহিন গাছের ছায়ায় বসে সেগুলো খেতে শুরু করে। এরই মধ্যে অত্যন্ত ধীরলয়ে হাতে একটা সুন্দর খেলার পুতুল আর একগুচ্ছ ফুল নিয়ে নিঃশব্দে অহিন দের বাড়ি ঢুকে পড়ে ইভা।
কোন দিকে তার লক্ষ্য নেই। বারান্দায় উঠেই ছোট মেয়েটাকে কোলে নেয়। মেয়েটা পুতুল দেখে চুপ করে থাকে।
ইভা বলে - তোমার নাম কি মা?
আগে পুতুল দাও।
দেবো আগে তোমার নাম বল?
ছোট্ট মেয়েটি উত্তর দেয় - নুপূর।
ইভা ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বলে - নুপূর?
নুপূর মাথা নাড়ে। ইভা নুপুরের দুই গালে চুম্বন দেয়, তারপর পুতুলটি নুপূরের হাতে দিয়ে বলে - খেলা কর। আর এই নাও ফুলগুলো রাখো। নুপূর এক হাতে ফুল আর একহাকে পুতুল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। ইভা বেরিয়ে আসে।
নুপূর ডাকে - এ্যাই - এ্যাই
দরজার আড়ালে থেকে তৃষা এসে বলে - বল মাসি।
নুপূর ডাকে - মা -সি মা - সি
ইভার আর যাওয়া হয় না। ঘুরে দাঁড়ায়। তৃষা নুপূর কে বলে যাও মাসিকে ডাকো। ঘরে নিয়ে এসো। নুপূর পুতুল হাতে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে দৌড়াতে থাকে। ঝমঝম করে নুপূরের সুর বেজে ওঠে। ইভার কানে লাগে শব্দ টা। ইভা এগিয়ে এসে ছোট্ট নুপূর কে কোলে তুলে নিয়ে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে।
সমাপ্ত ।।
১৬ ই জানুয়ারি ২০০৭
0 মন্তব্যসমূহ